Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
কবি শামসুর রাহমানের বাড়ি
স্থান

রায়পুরা উপজেলার মেঘনা নদী বেষ্টিত পাড়াতলী ইউনিয়নে।

কিভাবে যাওয়া যায়

ঢাহা-সিলেট মহাসড়কের বারৈচা বাসস্ট্যান্ড অথবা মেথিকান্দা রেলস্টেশন থেকে সিএনজি যোগে পান্থশালা। পান্থশালা থেকে ট্রলার যোগে কবি’র পৈত্রিক বাড়ি।

বিস্তারিত

আমাদের বাংলাদেশের কবি শামসুর রাহমানের বাড়ী রায়পুরা উপজেলা পাড়াতলী গ্রামে। অনেক দূর-দূরান্ত থেকে পর্যটকরা কবি শামসুর রাহমানের বাড়ি দেখতে আসে। কবি শামসুর রাহমানের বাড়িটি জমিদার আমলের ছিল। তাই ইহা অনেক পুরোনো। সেই বাড়িটিতে এখনো কবি শামসুর রাহমানে স্মৃতি জড়িয়ে আছে। বাড়িটির সামনে একটি পুকুর আছে। সেই পুকুর নিয়েও কবি একটি কবিতা লিখেছিলেন। আর একটি কুয়ো আছে। তবে পর্যটকরা সবসময়ই কবি শামসুর রাহমানের বাড়ি দেখতে আসে।


‘মেঘনা নদী দেব পাড়ি/ কল-অলা এক নায়ে। /আবার আমি যাব আমার/পাড়াতলী গাঁয়ে। /গাছ-ঘেরা ঐ পুকুরপাড়ে/ বসব বিকাল বেলা। /দু-চোখ ভরে দেখব কত/ আলো-ছায়ার খেলা। /বাঁশবাগানে আধখানা চাঁদ/ থাকবে ঝুলে একা। /ঝোপে ঝাড়ে বাতির মতো/ জোনাক যাবে দেখা।’ শামসুর রাহমানের ‘প্রিয় স্বাধীনতা’ কবিতার এই চরণগুলো অনেকেরই পড়া। কিন্তু পাড়াতলী গাঁ সম্পর্কে জানা আছে কি?

পাড়াতলী গ্রামটি নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায়। কবির দশম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ প্রতিবেদক গিয়েছিলেন ওই গ্রামে। কবির স্মৃতিবিজরিত বাড়িটিকে জরাজীর্ণ অবস্থায় দেখা গেছে।

কবি শামসুর রাহমান ১৯২৯ সালের ২৩ অক্টোবর ঢাকার মাহুতটুলিতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পরিবার নিয়ে চলে আসেন পাড়াতলী গ্রামে। এপ্রিলের প্রথম দিকে তিনি এ গ্রামে বসে লেখেন বিখ্যাত কবিতা ‘স্বাধীনতা তুমি’ ও ‘তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা’। এ ছাড়া বিভিন্ন লেখায় তাঁর এই গ্রামের বর্ণনা পাওয়া যায়। তিনি ২০০৬ সালের ১৭ আগস্ট ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।

রায়পুরা উপজেলার সদর থেকে পান্থশালা খেয়াঘাট হয়ে মেঘনা নদীর ওপারে পাড়াতলী গ্রাম। তিনি মুক্তিযুদ্ধকালে তিন থেকে চার মাস এ গ্রামে কাটিয়েছিলেন। কবির স্মৃতিবিজড়িত অনেক ঘটনা এখনো এ গ্রামের অনেকে স্মরণ করেন। বাড়ির পুকুরপাড়ের আমগাছের নিচে বসে কবি সৃষ্টি করেছিলেন স্বাধীনতার বিখ্যাত দুটি কবিতা। কালের সাক্ষী হয়ে সেই পুকুর ও সংস্কারবিহীন জরাজীর্ণ বাড়ি পড়ে রয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে থাকেন কবির এক আত্মীয়।

কবির ভাতিজা এরশাদুর রহমান বলেন, ‘পাড়াতলিতে কবির অনেক স্মৃতি ছড়িয়ে রয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কবিতাপ্রেমীরা এ বাড়িতে আসেন। কিন্তু কবির কর্ম ও জীবনের কোনো স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষিত না হওয়ায় তাঁরা হতাশ হয়ে ফিরে যান।’

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কবি শামসুর রাহমানের নামে ২০০৯ সালে জেলা পরিষদের অর্থায়নে পাড়াতলী কলিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নির্মিত হয়েছিল কবি শামসুর রাহমান পাঠাগার। এতে ব্যয় হয়েছিল ২২ লাখ টাকা। অবকাঠামো নির্মাণ ও কিছু আসবাব দেওয়া হলেও অদ্যাবধি জনবল বা বই মেলেনি।

পাড়াতলী কলিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুল হক বলেন, ‘শামসুর রাহমানের মতো কবির সঙ্গে এ গ্রামের ইতিহাস যুক্ত। কিন্তু আমরা তাঁকে যথাযথ মর্যাদা দিতে ব্যর্থ হচ্ছি। কবির নামে পাঠাগারটি নির্মাণের সাত বছর পার হলেও তা আজও আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়নি। একাধিকবার প্রয়োজনীয় বই ও জনবল দেওয়ার আবেদন জানিয়েও পাওয়া যায়নি।’

কবি শামসুর রাহমান ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার তৌফিকুর রাহমান জানান, এবারই প্রথম পাড়াতলীতে মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে কবি-সাহিত্যিক মিলনমেলা, আলোচনা ও কবিতা আবৃত্তির আয়োজন করা হয়েছে। এতে দেশবরেণ্য কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, ভক্ত-অনুরাগী ও শুভানুধ্যায়ীরা অংশ নেবে। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ওনার (কবির) কবিতা যারা অসাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাস করে তাদের প্রেরণার উৎস। ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে কবির বাড়ি সংরক্ষণ করা হবে। যাতে আগন্তুক দর্শনার্থীরা কবির জীবন ও কর্ম সম্পর্কে জানতে পারেন। আমরা এ ব্যাপারে সরকারের সহযোগিতা প্রত্যাশা করি।’